Wednesday, June 26, 2013

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ বিনোদনের উত্তম মাধ্যম হয়ে গিয়েছে। এখানে মহিলা সাংসদরা যে নোংরা ভাষায় একে অন্যকে আক্রমণ করছেন তা রীতিমত লজ্জাজনক। পুরাতন কিছু নিয়ম মেনে ধর্মকে টেনে এনেছেন তারা।

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ বিনোদনের উত্তম মাধ্যম হয়ে গিয়েছে। এখানে মহিলা সাংসদরা যে নোংরা ভাষায় একে অন্যকে আক্রমণ করছেন তা রীতিমত লজ্জাজনক। পুরাতন কিছু নিয়ম মেনে ধর্মকে টেনে এনেছেন তারা।

১। খালেদা জিয়ার বাবা ইহুদী আর মা মারমা হলে অপু উকিলের সমস্যা টা কী? তার মত একজন হিন্দু নারীর কাছ থেকে আমরা এধরণের কথা আশা করতে পারি না। বর্তমান বিশ্বে ইহুদীদের দেখতে পারে না একটি বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়। তারা নিজেরা আরব বিশ্ব থেকে ইহুদীদের উৎখাত করেছে এই কথা কোনদিনও বলবে না আর এক ফিলিস্তিন নিয়ে কাঁদে। এরা আসলে বিশ্বের কোন সম্প্রদায়কেই দেখতে পারে।

http://en.wikipedia.org/wiki/Jewish_exodus_from_Arab_and_Muslim_countries

হিন্দুরা ইহুদীদের মত নির্যাতিত। তারা কোন জাতিকে ঘৃণা করতে পারে না। তাই অপু উকিলের কাছ থেকে এই মন্তব্য অন্যায়। খালেদা জিয়াকে আমরা তার কর্ম দিয়ে বিচার করব। তার জন্ম দিয়ে নয়।

২। বিএনপির নারী সাংসদরা আগের মত হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন। গত শুক্রবার ওয়াকআউটের সময় বিএনপির মহিলা সদস্যরা চিৎকার করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে ‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম, শেখ হাসিনার বাপের নাম’- এমন আপত্তিকর স্লোগান দিতে দিতে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। অধিবেশনের বাইরেও বিএনপির পাঁচ মহিলা এমপি ধর্মীয় উস্কানিমূলক ওই স্লোগান দিতে দেখা যায়।

http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=27&dd=2013-06-21&ni=139738

হরে কৃষ্ণ, হরে রাম, শেখ হাসিনার বাপের নাম এই কথার মানে কি? 'আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে দেশ ভারত হয়ে যাবে', 'মসজিদে আজানের পরিবর্তে উলুধ্বনি শোনা যাবে', 'হরে কৃষ্ণ হরে রাম শেখ হাসিনার অপর নাম', 'জয় বাংলা জয় হিন্দ, লুঙ্গি খুলে ধুতি পিন্দ', 'বিসমিল্লাহ কায়েম রাখো, ধানের শীষে সিল মারো', 'হিন্দুদের গোলামি রুখতে বিএনপিকে ভোট দিন' এই স্লোগানগুলো তো আপনারাই দিয়েছিলেন তাই নয় কি? হিন্দুরা আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক হওয়ার কল্পিত অপরাধে ২০০১ সালের নির্বাচনপূর্ব ও উত্তর সময়কালে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে নির্মম শাস্তি দিতেও পিছপা হয়নি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দল বিএনপি ও সরকার। জাতীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগের গবেষক মোহাম্মদ রফি তাঁর গবেষণাগ্রন্থে দেখিয়েছেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের মাস অক্টোবর থেকে ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১২০টি উপজেলায় সংখ্যালঘুদের বিশেষ করে হিন্দুদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে বাধা দেওয়া হয়েছে। ১৯০টি উপজেলায় তারা চাঁদাবাজির শিকার হয়েছে। ১৩৭টি উপজেলায় সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। ১২৮টি উপজেলায় তাদের সহায়-সম্পদ লুটের ঘটনা ঘটেছে। ১৬২টি উপজেলায় সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে। ২০২টি উপজেলায় হিন্দুরা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। গবেষকদের ভাষায়, সরকার সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগ বন্ধে কোনো উদ্যোগ নেয় না, বরং নিষ্ঠুর ও নির্বিকার আচরণ করে।

আমরা চট্টগ্রামে আর সিলেটে মেয়র নির্বাচনে আপনাদের ভোট দিয়েছি। কিন্তু হিন্দুদের প্রতি বিদ্বেষ আপনাদের যায় নাই।

ধিক আপনাদের।

No comments:

Post a Comment