আমাদের হিন্দু ধর্ম সাম্যবাদী ধর্ম। তাহলে কেন এই বর্ণ প্রথা?
আসুন তার উত্তর আমরা জানি শ্রী গোবিন্দ চন্দ্র বাঞ্চাপ্রিয় রচিত “ হিন্দু ধর্মের রূপরেখা” বই অবলম্বনে। তার বইের “চতুর্বর্ণ” অধ্যায় থেকে ব্যাখ্যা করছি।
বর্ণ শব্দের অর্থ “রং”। হিন্দু ধর্মে যে ত্রিগুন স্বীকৃত তা এই বর্ণ নির্ভর বলে ধারনা করা হয়। সত্যগুণ, রজগুন, তমোগুণ এই গুন তিনটি হল মানুষের মৌলিক গুন। এসব গুনকে ভিত্তি করেই আদিযুগে প্রচলন ঘটানো হয়েছিল কর্ম বিভাজনের। কর্ম বিভাজনের সময় মানুষকে ৪ টি ভাগে ভাগ করা হয় যেটা চতুর্বর্ণ হিসেবে পরিচিত। কর্মক্ষেত্রের প্রকান্তরে এই বিভাজন সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং তা ছিল আত্যন্ত যুক্তিযুক্ত । যারা অধ্যাপনা, জ্ঞানদান এবং সমাজের বিভিন্ন কল্যাণকর কর্ম সম্পাদন করতেন তাদের বলা হত ব্রাহ্মণ। এরা ছিল সত্যগুণ প্রধান।
তেমনি যাদের সত্যগুণ কম ছিল এবং রজগুন বেশি ছিল তাদের নিয়োগ করা হত রাজকার্যে। তাদের বলা হত ক্ষত্রিয়।
রজগুন বেশি থেকেও যাদের স্বল্প তমগুন থাকত তাদের কর্মস্থল ছিল কৃষি ও বানিজ্জাদি। এদেরকে বলা হত বৈশ্য।
আর যারা ছিল জ্ঞানের দিক থেকে তমাচ্ছন্ন বা অলস প্রকৃতির তারা জীবিকা নির্বাহের জন্য নিয়োজিত হত ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রীয় ও বৈশ্যের সেবামূলক পেশায় তারাই শূদ্র।
এই কর্ম ভিত্তিক বিভাজনকেই বলা হয় কর্ম বিভাজন/ চতুর্বর্ণ।
একই পরিবারে থাকত বিভিন্ন বর্ণের লোক এমনকি চতুর্বর্ণের লোকও। এক পিতামাতার চার সন্তানের কেউ হত ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রীয়,বৈশ্য অথবা শূদ্র। একই পিতা-মাতারই চার সন্তানের মেধার ও কর্ম প্রচেষ্টার বিভিন্নতা বাস্তবতার অতীত নয়। তাই একই পরিবারের বিভিন্ন সন্তান নিয়োজিত হত বিভিন্ন বর্ণের কর্মে। এতে কোন দোষেরও কিছু ছিল না, ছিল না ঘৃণারও। আর বর্ণ প্রথা ছিল না গোষ্ঠী ভিত্তিক, অঞ্চলভিত্তিক বা দলভিত্তিক। অর্থাৎ হিন্দু ধর্মে তখন চতুর্বর্ণের উপস্থিতি থাকলেও একে ভিত্তি করে এ ধর্মের মানুষের মধ্যে কোন বিভেদ ছিল না।
মহাভারতের ধর্মরাজ যুধিষটির মতামত, ভৃগু- ভরদ্বাজ সংবাদে মহর্ষি ভৃগুর বর্ণভেদের উৎপত্তি বিষয়ক উক্তি , উমা- মহেশ্বর সংবাদে মহাদেবের বক্তব্য থেকে একথা স্পষ্ট যে হিন্দু ধর্মের বর্ণভেদ সম্পূর্ণ মানুষের চরিত্র নির্ভর, বংশ পরম্পরায় নয়। কাজেই ব্রাহ্মণের পুত্র যে ব্রাহ্মণই হবে অথবা শূদ্রের পুত্র যে শূদ্রই হবে এমন কোন নিয়ম নেই সনাতন ধর্মে। পূর্বে কাজের পরিধি ছিল সীমিত, কিন্তু আজ তা বিস্তৃত।
আজ দেখা যায়, কৃষকের ছেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন। আর আজকে যে আমরা কায়স্ত, মাতুয়া, নমশূদ্র, হাইয়ার কাস্ট নামে যে সকল বর্ণের কথা শূনতে পাই তার অস্তিত্ব সনাতন ধর্মের কথাও নেই। এগুলা স্বার্থন্যাসী মানুষেরই সৃষ্টি। তাই আমাদের উচিত সকল ভেদাভেদ ভুলে এক সনাতন ধর্মের অনুসারী হিসেবে নিজেদের সমাজে প্রতিষ্ঠা করা। আমাদের বড় পরিচয় আমরা হিন্দু।
সংগ্রহীত
আসুন তার উত্তর আমরা জানি শ্রী গোবিন্দ চন্দ্র বাঞ্চাপ্রিয় রচিত “ হিন্দু ধর্মের রূপরেখা” বই অবলম্বনে। তার বইের “চতুর্বর্ণ” অধ্যায় থেকে ব্যাখ্যা করছি।
বর্ণ শব্দের অর্থ “রং”। হিন্দু ধর্মে যে ত্রিগুন স্বীকৃত তা এই বর্ণ নির্ভর বলে ধারনা করা হয়। সত্যগুণ, রজগুন, তমোগুণ এই গুন তিনটি হল মানুষের মৌলিক গুন। এসব গুনকে ভিত্তি করেই আদিযুগে প্রচলন ঘটানো হয়েছিল কর্ম বিভাজনের। কর্ম বিভাজনের সময় মানুষকে ৪ টি ভাগে ভাগ করা হয় যেটা চতুর্বর্ণ হিসেবে পরিচিত। কর্মক্ষেত্রের প্রকান্তরে এই বিভাজন সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং তা ছিল আত্যন্ত যুক্তিযুক্ত । যারা অধ্যাপনা, জ্ঞানদান এবং সমাজের বিভিন্ন কল্যাণকর কর্ম সম্পাদন করতেন তাদের বলা হত ব্রাহ্মণ। এরা ছিল সত্যগুণ প্রধান।
তেমনি যাদের সত্যগুণ কম ছিল এবং রজগুন বেশি ছিল তাদের নিয়োগ করা হত রাজকার্যে। তাদের বলা হত ক্ষত্রিয়।
রজগুন বেশি থেকেও যাদের স্বল্প তমগুন থাকত তাদের কর্মস্থল ছিল কৃষি ও বানিজ্জাদি। এদেরকে বলা হত বৈশ্য।
আর যারা ছিল জ্ঞানের দিক থেকে তমাচ্ছন্ন বা অলস প্রকৃতির তারা জীবিকা নির্বাহের জন্য নিয়োজিত হত ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রীয় ও বৈশ্যের সেবামূলক পেশায় তারাই শূদ্র।
এই কর্ম ভিত্তিক বিভাজনকেই বলা হয় কর্ম বিভাজন/ চতুর্বর্ণ।
একই পরিবারে থাকত বিভিন্ন বর্ণের লোক এমনকি চতুর্বর্ণের লোকও। এক পিতামাতার চার সন্তানের কেউ হত ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রীয়,বৈশ্য অথবা শূদ্র। একই পিতা-মাতারই চার সন্তানের মেধার ও কর্ম প্রচেষ্টার বিভিন্নতা বাস্তবতার অতীত নয়। তাই একই পরিবারের বিভিন্ন সন্তান নিয়োজিত হত বিভিন্ন বর্ণের কর্মে। এতে কোন দোষেরও কিছু ছিল না, ছিল না ঘৃণারও। আর বর্ণ প্রথা ছিল না গোষ্ঠী ভিত্তিক, অঞ্চলভিত্তিক বা দলভিত্তিক। অর্থাৎ হিন্দু ধর্মে তখন চতুর্বর্ণের উপস্থিতি থাকলেও একে ভিত্তি করে এ ধর্মের মানুষের মধ্যে কোন বিভেদ ছিল না।
মহাভারতের ধর্মরাজ যুধিষটির মতামত, ভৃগু- ভরদ্বাজ সংবাদে মহর্ষি ভৃগুর বর্ণভেদের উৎপত্তি বিষয়ক উক্তি , উমা- মহেশ্বর সংবাদে মহাদেবের বক্তব্য থেকে একথা স্পষ্ট যে হিন্দু ধর্মের বর্ণভেদ সম্পূর্ণ মানুষের চরিত্র নির্ভর, বংশ পরম্পরায় নয়। কাজেই ব্রাহ্মণের পুত্র যে ব্রাহ্মণই হবে অথবা শূদ্রের পুত্র যে শূদ্রই হবে এমন কোন নিয়ম নেই সনাতন ধর্মে। পূর্বে কাজের পরিধি ছিল সীমিত, কিন্তু আজ তা বিস্তৃত।
আজ দেখা যায়, কৃষকের ছেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন। আর আজকে যে আমরা কায়স্ত, মাতুয়া, নমশূদ্র, হাইয়ার কাস্ট নামে যে সকল বর্ণের কথা শূনতে পাই তার অস্তিত্ব সনাতন ধর্মের কথাও নেই। এগুলা স্বার্থন্যাসী মানুষেরই সৃষ্টি। তাই আমাদের উচিত সকল ভেদাভেদ ভুলে এক সনাতন ধর্মের অনুসারী হিসেবে নিজেদের সমাজে প্রতিষ্ঠা করা। আমাদের বড় পরিচয় আমরা হিন্দু।
সংগ্রহীত
No comments:
Post a Comment