Wednesday, August 7, 2013

অনেকদিন পরে কিছু সামান্য ঘটনা শেয়ার করছি।

Bangali Hindu Post (বাঙ্গালি হিন্দু পোস্ট)
একজন হিন্দু ভাইয়ের দেয়া একটি স্ট্যাটাস-

অনেকদিন পরে কিছু সামান্য ঘটনা শেয়ার করছি।
কিছুদিন আগে আমি আমার এক পরিচিত আন্টির মেয়ের জন্মদিনে আমন্ত্রিত ছিলাম।তাদের পরিবারটি এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবার।সেই অনুষ্ঠানে উনার বোনেরা আর দুলাভাইও ছিল। সেখানে আমি ছাড়াও আরও হিন্দু আমন্ত্রিত ছিল তাই গোমাংস রান্না হয়নি। তো খেতে বসেছি, সেই সময়ে আন্টির বোন বলল, তুমি গরু খাওনা!!!? আমি বললাম না। তিনি তখন বললেন আমার বাসায় অনেক হিন্দু আসেগরু খেতে, তারা বাসায় গরু নিয়ে যেতে পারে না তো তাই ফোন করে গরু রান্না করতে বলে এবং এসে খেয়ে যায়। এইকথা বলে সবাই হাসাহাসি শুরু করল। কিছু বললাম না কারণ এইসব কথা আমার মন বিচলিত করতে পারেনা। বলা শুরু করল যে হিন্দুরাও গরু খায়।
তখন একটি কথা বলতে চেয়েছিলাম যে, মিসেস আন্টি সেই গরু খাওয়া হিন্দুটি কিন্তু শুকর ও খায়। গরু খায় তাই খুশি হলেন, আর শুকর খাওয়ার কথাটা বললেন না??

বললাম না কিছুই। কমন সেন্স যাদের কম তাদের সাথে কথা নাবাড়ানোই ভালো।

যেই লোক গরু খেল সে হিন্দু নয়, যে লোকটি শুকর খায় সে মুসলিম নয়, তার জন্ম পরিচয় ধর্ম পরিচয় তাহলে কোনটা?? এইটা বোঝার ক্ষমতা যার নাই তার কি কমন সেন্স আছে???
অপরদিকে আমি গরু শুকর দুটিই খাইনা সেক্ষেত্রে আমি সকল ধর্মের সকল কালের।
এখানেই শেষ হতে পারত। কিন্তু শেষ হয়নি। এরপর বলল হিন্দুরা গরুর মাংস খায়না কিন্তু দুধ খায়। তারপর অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল!! এখনও সেই হাসিটা কানে ঝাঁই ঝাঁই করে বাজে! আমি সন্দেহে পরে গেছিলাম যে এই মহিলা আসলেই নারী? নাকি অন্যকিছু? তার আবার দুটি সন্তান আছে!!!!
সেইমহিলা কি তার সন্তানদেরকে নিজের বুকের দুগ্ধ পান করাননাই?? নিশ্চয়ই করিয়েছেন। তাহলে এখন যদি তার সন্তানেরা তার স্তনের মাংস খায় তখন তার কেমন লাগবে??

মা হয়েও এই কথাটা বুঝেনা। গরুর দুধকে গরুর মাংসের সাথে গুলিয়ে ফেলল, কিন্তু নিজের দুধকে নিজের মাংসের সাথে গুলিয়ে ফেলল না!!!!
এই হল সেই মহিলার কান্ড।
মনে মনে হাসতে হাসতে আমার পেট ফেটে গিয়েছিল।
আমি শিওর যে কোন হিন্দু যদি এরকম কিছু করত তাহলে অবশ্যইতাদের সম্পর্কে ফাটল ধরত। কিন্তু আমার প্রিয় ধর্মীয়গ্রন্থগুলো তা হতে দেয়নি। আমি গর্বিত।

স্ট্যটাসটি পড়ে এডমিনের মতামত-
আপনার স্ট্যটাস পড়ে খুশি হতে পারলাম না,কেননা অবশ্যই যুক্তিগুলোকে আপনার উনার সামনেই উপস্থিত করা দরকার ছিল।আপনি বললেন কমনসেন্সহীন লোকের কাছে এসব বলে লাভ নেই।কিন্তু ধারনাটা নিতান্তই ভূল।এক্ষেত্রে হুমায়ুন আহমেদের একটা বইয়ে তাঁর উল্লেখিত একটা গল্প বলি-
একবার মহর্ষি কাশ্যপ এর কাছে এক লোক এসেছে দীক্ষা নিতে।তখন মহর্ষি বললেন,তুমি যদি আজকের দিনেরমধ্যে একটি ভাল কাজ করতে পার তবে আমি তোমায় দীক্ষা দেব।তখন ওই লোকটি ভাল কাজ করতে বের হল।খুঁজতে খুঁজতে সে একটি অসুস্থ ধুঁকতে থাকাকুকুরকে দেখতে পেল।তখন সে ভাবল একে মেরে ফেললে সে আর অসুখের কষ্ট পাবেনা যাকে ডাক্তারি ভাষায় Mercy killingবলা হয়।তখন এই ভেবে সে একটাপাথর দিয়ে মাথায় বারি মেরে কুকুরটিকে মেরে ফেলল।তারপরসে মুনিগৃহে ফিরে তাঁকে একথা বলল যে সে এক পশুকে যন্ত্রনা থেকে মুক্তি দিয়ে এসেছে।তখন মহর্ষি বললেন যাও,স্নান করে এস।আমি তোমায়দীক্ষা দেব। এ পর্যায়ে এসে পাঠকদের প্রশ্ন,ওই লোকতো মূলত খারাপ কাজই করেছে কুকুরটিকে মেরে কেননা ভাল কাজ হত যদি সে সেবা করে সে কুকুরটিকে ভাল করে তুলত।তাহলে মহর্ষি তাকে দীক্ষা দিতে রাজী হলেন কেন?উত্তরটা হল,যে ভাল কাজ করে তার দীক্ষার প্রয়োজন হয়না।যে খারাপ কাজ করে তারইদীক্ষার প্রয়োজন।

মোরাল-যার কমনসেন্স আছে তাকে শেখানোর দরকার নেই,যার নেই তাকেই শেখানো দরকার।

No comments:

Post a Comment