পৃষ্ঠাসমূহ
- হোম
- বাংলা ভাষা
- বাঙালি হিন্দুর ইতিহাস
- বাঙালি হিন্দু বার্তা
- দেশের সংবাদ
- আন্তর্জাতিক সংবাদ
- বাঙালি হিন্দুর জনসংখ্যা
- বাঙালি হিন্দুর উপর অত্যাচার
- বাঙালি হিন্দু সভ্যতা
- বাঙালি হিন্দুর খাবার
- বাঙালি হিন্দুর অনুষ্ঠান
- বাঙালি হিন্দুর ধর্মীয় রীতি নীতি
- দেশ বিদেশে বাঙালি হিন্দু
- বাঙালি হিন্দুর মন্দির এবং মঠ
- বাঙালি হিন্দু রাজা, সন্নাসী, এবং ধর্মগুরু
- আমাদের ভলান্টিয়ার হওন
- আমাদেরকে যোগাযোগ করুন
- আমাদের দান করুন
- বাংলা পড়তে অসুবিধা হলে
- কিছু অসাধারণ বই এবং আর্টিকেল
Monday, March 11, 2013
Saturday, March 9, 2013
বেদে কোনো বর্ণভেদ নেই
এটা
ভীষণ দুর্ভাগ্যজনক যে, যে বিশ্বের হিন্দু সম্প্রদায়ে বেদ হলো সমাজের মূল
ভিত্তি, সেখানে আমরা ভুলেই গেছি বেদের মূল শিক্ষাগুলো এবং নিজেদেরকে নানা
ভুল-ভ্রান্তিসমূহের ধারণায় জড়িয়ে ফেলেছি যেমন, জন্মগত caste system-সহ
নানারকম বৈষম্য। এরকম বিপথগামী চিন্তা-চেতনা, ধ্যান-ধারণা আমাদের সমাজকে
ভীষণ ক্ষতিসাধন করেছে এবং বৈষম্যের সূত্রপাত ঘটিয়ে দিয়েছে। দলিত নামক
জাতিচ্যুত ব্যক্তিদের আমরা দূরে ঠেলে দিয়েছি এবং এর ফলে আমাদের উন্নতি ও
প্রগতির বিকাশ স্থবির হচ্ছে। এর একমাত্র সমাধান হচ্ছে হিন্দু সমাজের মূলে
গিয়ে বেদকে জানা - যার ফলে আমরা আমাদের মধ্যে ভাঙা সম্পর্কগুলো পুনরায়
স্থাপণ করতে পারব।
এই লেখায় আমরা চেষ্টা করব বেদ অনুযায়ী আমাদের caste system সম্পর্কে প্রকৃত ইতিহাস উদঘাটন করার এবং শূদ্রের আসল অর্থ খোঁজার।
১।
প্রথমত, কোনো প্রকার হিংসা বা বৈষম্যের স্থাণ নেই বেদে যেকোনো ব্যক্তি সম্পর্কে - সে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, বা শূদ্র কিনা।
২।
Caste system প্রায় নতুন। বেদে কোনো শব্দ নেই যার অর্থ বর্ণ/জাতি হতে পারে। আসলে, caste, জাতি আর বর্ণ এগুলো এক একটি এক এক অর্থ বহন করে।
Caste হলো একটি ইউরোপীয় নবধারা যার সাথে বৈদিক সংস্কৃতির কোনো সামঞ্জস্যতা নেই।
জাতি
'জাতি'র অর্থ হচ্ছে এক শ্রেণীভুক্তকরণ যার উৎস হচ্ছে জন্মে। ন্যায় সূত্র বলেছে "সমানপ্রসাভাত্মিকা জাতিহ্" অথবা তারা যাদের একইপ্রকার জন্মসূত্র যা এদেরকে একটি জাতিতে সমষ্টিবদ্ধ করে।
একটি প্রাথমিক আরো বড় শ্রেণীভুক্তকরণ ঋষিদের দ্বারা করা হয়েছে চারভাবে: উদ্ভিজ (অর্থাৎ গাছপালা), আন্ডাজ (অর্থাৎ ডিম থেকে যার উৎপত্তি যেমন পাখি এবং সরীসৃপ), পিন্ডজ (স্তন্যপায়ী), উষ্মজ (তাপমাত্রা বা পরিবেষ্টনকারী আবহাওয়ার জন্য যার জন্ম যেমন ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া ইত্যাদি)।
তেমনিভাবে নানাপ্রকার পশুসমূহ যেমন হাতি, সিংহ, খরগোশ ইত্যাদি তৈরি করে এক ভিন্ন 'জাতি'। একইভাবে সমস্ত মানবকুল তৈরি করে একটি 'জাতি'।
একটি নির্দিষ্ট জাতির থাকবে একই ধরনের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য যারা সেই জাতি থেকে আরেক জাতিতে পরিবর্তিত হতে পারবে না এবং ভিন্ন জাতির বাচ্চা প্রসব করতে পারবে না। অর্থাৎ, জাতি হচ্ছে ঈশ্বরের সৃষ্টি।
ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্রেরা কোনোভাবেই ভিন্ন জাতি নয় কারণ তাদের মধ্যে জন্ম সূত্রগত বা বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যগত কোনো পার্থক্য নেই যা তাদেরকে ভিন্ন করবে।
পরবর্তীতে 'জাতি' শব্দটি ব্যবহৃত হতে শুরু করে যেকোনো প্রকার শ্রেণীভেদকরণের জন্য। তাই সাধারণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা ভিন্ন ভিন্ন সমাজকেও ভিন্ন ভিন্ন 'জাতি' হিসেবে আখ্যা দেই। কিন্তু এ শুধু ব্যবহারের সুবিধার জন্য। আসলে আমরা মানবকুল এক জাতিরই অংশ।
বর্ণ
প্রকৃত যে শব্দ ব্যবহার করা হয়েছিল ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র বোঝাতে তা হলো 'বর্ণ' ('জাতি' নয়)।
'বর্ণ' শব্দটি যবহৃত হয়েছে এই চারকে বোঝাতেই নয়, বরং দস্যু ও আর্যদেরকেও।
'বর্ণ' অর্থ হচ্ছে তাহাই যাহা গ্রহণ করা হয় পছন্দের দ্বারা। তাই, যেখানে 'জাতি' ঈশ্বর দ্বারা প্রদত্ত, 'বর্ণ' হচ্ছে আমাদের নিজস্ব পছন্দগত।
যারা আর্য হতে পছন্দ করে তাদের বলা হয় 'আর্য বর্ণ'। তেমনি যারা দস্যু হতে পছন্দ করে, তারা হয় 'দস্যু বর্ণ'। একইভাবে হয় ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র।
এই কারণেই বৈদিক ধর্মকে বলা হয় 'বর্ণাশ্রম ধর্ম'। বর্ণ শব্দটি ইঙ্গিত করে যে এটির ভিত্তি হচ্ছে নিজ পছন্দকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া ও যোগ্যতা অনুসারে পরিচালিত ব্যবস্থাকে অনুমোদন দেয়া।
৩।
যারা বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত, তারা পছন্দ করেন 'ব্রাহ্মণ বর্ণ'। যারা প্রতিরক্ষা, যুদ্ধ-বিগ্রহ পছন্দ করেন, তারা হন 'ক্ষত্রিয় বর্ণ'। যারা অর্থনীতি ও পশুপালনাদি পছন্দ করেন তারা হন 'বৈশ্য বর্ণ' এবং যারা নিয়োজিত আছেন অন্যান্য সেবামূলক কাজ-কর্মে, তারা হন 'শূদ্র বর্ণ'। এসব শুধু বোঝায় নানা ধরনের পছন্দ যেসব মানুষজন তাদের কর্মের জন্য নির্বাচন করেন এবং এর সাথে 'জাতি' বা জন্মের কোনো সম্পর্ক নেই।
৪।
পুরুষ সুক্তের অন্যান্য মন্ত্রসমূহ উদ্ধৃতি দিয়ে প্রমাণ করেছে যে, ব্রাহ্মণ এসেছে ঈশ্বরের মুখ থেকে, ক্ষত্রিয় হাত থেকে, বৈশ্য উরু থেকে এবং শূদ্র পা থেকে। সেইভাবে এইসব বর্ণসমূহ জন্মগত। কিন্তু কোনোকিছুই এর চেয়ে বেশী ভ্রান্তিজনক হতে পারে না। আসুন দেখি কেন:
(অ)
বেদ ঈশ্বরকে বর্ণনা করে আকারহীন ও অপরিবর্তনশীল হিসেবে। এমন ঈশ্বর কিভাবে বিশাল আকৃতির মানুষের রূপ ধারণ করতে পারে যদি তিনি আকারহীনই হন? (যজুর্বেদ ৪০.৮)
(আ)
যদি ইহা সত্যিই হয়, তাহলে তাহা বেদের কর্মতত্ত্বের বিরোধীতা করবে। কারণ কর্মতত্ত্ব অনুযায়ী, একজন ব্যক্তির জন্মগত পরিবার পরিবর্তিত হতে পারে তার কর্ম অনুসারে। সুতরাং একজন ব্যক্তি যে শূদ্র পরিবারে জন্ম নেয়, পরের জন্মে এক রাজার পরিবারে জন্ম নিতে পারে। কিন্তু যদি শূদ্রেরা ঈশ্বরের পা থেকে এসে থাকে, তাহলে সেই একই শূদ্র ঈশ্বরের হাত থেকে কিভাবে জন্ম নেয়?
(ই)
আত্মা হলো সময়হীন এবং কখনো জন্ম নেয় না। সুতরাং আত্মার কখনোই কোনো বর্ণ হতে পারে না। এ শুধুমাত্র যখন আত্মা জন্ম নেয় মনুষ্য হিসেবে তখনই এর সুযোগ থাকে বর্ণ বেছে নেবার। তাহলে বর্ণ দ্বারা কি বোঝানো হয় যা ঈশ্বরের একাংশ হতে আসে? যদি আত্মা ঈশ্বরের দেহ থেকে জন্ম না নিয়ে থাকে, তাহলে কি এই বোঝায় যে আত্মার দেহ তৈরি হয়েছে ঈশ্বরের দেহের অংশ থেকে? কিন্তু বেদ অনুযায়ী, এমনকি প্রকৃতিও চিরন্তন। এবং এই একই অনু-পরমানু পুনর্ব্যবহৃত হচ্ছে নানা মনুষ্যের মধ্যে। তাই কৌশলগতভাবে ঈশ্বরের দেহ থেকে জন্ম নেয়া কারো পক্ষে অসম্ভব, এমনকি আমরা যদি ধরেও নেই ঈশ্বরের দেহ আছে।
(ঈ)
উপরে উল্লেখ করা পুরুষ সুক্ত রয়েছে যজুর্বেদের ৩১তম অধ্যায়ে (এবং ঋগবেদ ও অথর্ববেদ বাদে যেগুলোতে কিছু ভিন্নতা রয়েছে। যজুর্বেদে এ হচ্ছে ৩১.১১)। প্রকৃতভাবে এর অর্থ কি তা বোঝার জন্য, আসুন দেখি এর আগের মন্ত্রের দিকে লক্ষ্য করি ৩১.১০।
এতে প্রশ্ন করা হয়েছে - কে মুখ? কে হাত? কে উরু আর কেই বা পা?
এর পরের মন্ত্র এর উত্তর দিয়েছে - ব্রাহ্মণ হলো মুখ, ক্ষত্রিয় হলো হাত, বৈশ্য হলো উরু এবং শূদ্র হলো পা।
লক্ষ্য করুন, মন্ত্রটি কিন্তু বলছে না ব্রাহ্মণ "জন্ম নেয়" মুখ থেকে...এটি বলছে ব্রাহ্মণ "হলো" মুখ।
কারণ যদি মন্ত্রটির অর্থ হতো "জন্ম নেওয়া" তাহলে এটি উত্তর দিত না আগের মন্ত্রের প্রশ্নটির "কে মুখ?"
যেমন, যদি আমি প্রশ্ন করি "দশরথ কে?" উত্তরটি যদি হয় "রাম জন্ম নেন দশরথের ঘরে" তাহলে তা হবে অর্থহীন।
প্রকৃত অর্থ হচ্ছে:
সমাজে ব্রাহ্মণ বা বুদ্ধিজীবিরা তৈরি করে মস্তিষ্ক বা মাথা বা মুখ যা চিন্তা করে এবং বলে। ক্ষত্রিয় বা রক্ষণকর্মীরা তৈরি করে হাত যা রক্ষা করে। বৈশ্য বা উৎপাদনকারীরা এবং ব্যবসায়ীরা তৈরি করে উরু যা ভার বহন করে এবং যত্ন করে (লক্ষ্য করুন উরুর হাড় অথবা উর্বাস্থি তৈরি করে রক্ত এবং এ হচ্ছে দেহের সবচেয়ে শক্ত হাড়)। অথর্ববেদে উরুর বদলে "মধ্য" শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে যার অর্থ বোঝায় পাকস্থলী এবং দেহের মধ্যের অংশ।
শূদ্র বা শ্রমিকেরা তৈরি করে পা যা কাঠামোটিকে দাঁড় করায় এবং দেহকে চলতে সক্ষম করে।
পরবর্তী মন্ত্রগুলো আলোচনা করেছে অন্যান্য দেহের অংশ সম্পর্কে যেমন - মন, চোখ ইত্যাদি। পুরুষ সুক্ত বর্ণনা করেছে সৃষ্টির সূত্রপাত এবং তার স্থায়ী থাকা সম্পর্কে যার মধ্যে অন্তর্গত মানব সমাজ এবং বর্ণনা করেছে অর্থপূর্ণ সমাজের উপাদানসমূহকে।
তাই এ ভীষণ করুণ অবস্থা যে এমন সুন্দর সমাজ সম্পর্কে রূপক বর্ণনা এবং সৃষ্টি সম্পর্কিত বর্ণনা বিকৃত হয়েছে যা সম্পূর্ণভাবে বৈদিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে।
এমনকি ব্রহ্ম গ্রন্থগুলো, মনুস্মৃতি, মহাভারত, রামায়ণ এবং ভগবদগীতা বলে নাই কোনোকিছুই যার কাছাকাছি উপপ্রমেয় হতে পারে এমন অদ্ভূত যে ঈশ্বর তৈরি করেছেন ব্রাহ্মণদের তাঁর মুখ হতে মাংস ছিঁড়ে কিংবা ক্ষত্রিয়দের তাঁর হাতের মাংস থেকে বা অন্যান্যসমূহ।
৫।
তাই এটি স্বাভাবিক কেন ব্রাহ্মণরা বেদ অনুসারে সবচেয়ে বেশী সম্মান লাভ করেছে। এমনটিই হচ্ছে আজকের বর্তমান সমাজে। বুদ্ধিজীবিরা এবং অভিজ্ঞরা আমাদের সম্মান অর্জন করেন কারণ তারা তৈরি করেন দিক প্রদর্শনকারী সারা মানবতার জন্য। কিন্তু যেমনভাবে পূর্বে আলোচিত হয়েছে যে, বেদে শ্রমের মর্যাদা সমভাবে জোর দেওয়া হয়েছে এবং এই কারণেই কোনো প্রকার বৈষম্যের উপাদান নেই।
৬।
বৈদিক সংস্কৃতিতে সবাইকে ধরা হয় শূদ্র হিসেবে জন্ম। তারপর ব্যক্তির শিক্ষা-দীক্ষা দ্বারা সে পরিণত হয় ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্যতে। এই শিক্ষা-দীক্ষার পূর্ণতাকে ধরা হয় দ্বিতীয় জন্ম। একারণেই এই তিন বর্ণকে বলা হয় "দ্বিজ" বা দু'জন্মা। কিন্তু যারা রয়ে যায় অশিক্ষিত (যেকোনো কারণেই হোক) তারা সমাজ থেকে বিচ্যুত হয়। তারা চালিয়ে যায় শূদ্র হিসেবে এবং করে যায় সমাজের সেবামূলক কাজসমূহ।
৭।
এক ব্রাহ্মণের পুত্র, যদি সে তার শিক্ষা-দীক্ষা সম্পূর্ণ করতে অসমর্থ হয়, পরিণত হয় শূদ্রে। তেমনিভাবে শূদ্রের পুত্র অথবা এমনকি দস্যু, যদি সে তার শিক্ষা-দীক্ষা সম্পূর্ণ করে, তাহলে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় কিংবা বৈশ্য হতে পারে। এ হচ্ছে নির্ভেজাল যোগ্যতা অনুযায়ী ব্যবস্থা। যেমনভাবে এখনকার সময়ে ডিগ্রী প্রদান করা হয়, যজ্ঞপবিত দেয়া হতো বৈদিক নিয়ম অনুসারে। তাছাড়া, আচরণবিধির সাথে অসম্মতি ঘটলে যজ্ঞপবিত নিয়ে নেয়া হতো বর্ণগুলোর।
৮।
বৈদিক ইতিহাসে অনেক উদাহরণ রয়েছে বর্ণ পরিবর্তনের -
(ক)
ঋষি ঐতরেয়া ছিলেন দাস বা অপরাধীর পুত্র কিন্তু তিনি পরিণত হন শীর্ষ ব্রাহ্মণদের মধ্যে একজন এবং লেখেন ঐতরেয়া ব্রহ্ম এবং ঐতরেয়াপোনিষদ। ঐতরেয়া ব্রহ্মকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরা হয় ঋগবেদ বোঝার জন্য।
(খ)
ঋষি ঐলুশ জন্মেছিলেন দাসীর ঘরে যিনি ছিলেন জুয়াখোর এবং নিচু চরিত্রের লোক। কিন্তু এই ঋষি ঋগবেদের উপর গবেষণা করেন এবং কিছু বিষয় আবিষ্কার করেন। তিনি শুধুমাত্র ঋষিদের দ্বারা আমন্ত্রিতই হতেন না এমনকি আচার্য্য হিসেবেও অধিষ্ঠিত হন। (ঐতরেয়া ব্রহ্ম ২.১৯)
(গ)
সত্যকাম জাবাল ছিলেন এক পতিতার পুত্র যিনি পরে একজন ব্রাহ্মণ হন।
(ঘ)
প্রীষধ ছিলেন রাজা দক্ষের পুত্র যিনি পরে শূদ্র হন। পরবর্তীতে তিনি তপস্যা দ্বারা মোক্ষলাভ করেন প্রায়ঃশ্চিত্তের পরে। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.১.১৪)
যদি তপস্যা শূদ্রদের জন্য নিষিদ্ধ হতো যেমনভাবে উত্তর রামায়ণের নকল গল্প বলে, তাহলে প্রীষধ কিভাবে তা করল?
(ঙ)
নবগ, রাজা নেদিস্থের পুত্র পরিণত হন বৈশ্যে। তার অনেক পুত্র হয়ে যান ক্ষত্রিয়। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.১.১৩)
(চ)
ধৃষ্ট ছিলেন নবগের (বৈশ্য) পুত্র কিন্তু পরে ব্রাহ্মণ হন এবং তার পুত্র হন ক্ষত্রিয়। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.২.২)
(ছ)
তার পরবর্তী প্রজন্মে কেউ কেউ আবার ব্রাহ্মণ হন। (বিষ্ণু পুরাণ ৯.২.২৩)
(জ)
ভগবদ অনুসারে অগ্নিবেশ্য ব্রাহ্মণ হন যদিও তিনি জন্ম নেন এক রাজার ঘরে।
(ঝ)
রাথোটর জন্ম নেন ক্ষত্রিয় পরিবারে এবং পরে ব্রাহ্মণ হন বিষ্ণু পুরাণ ও ভগবদ অনুযায়ী।
(ঞ)
হরিৎ ব্রাহ্মণ হন ক্ষত্রিয়ের ঘরে জন্ম নেয়া সত্ত্বেও। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.৩.৫)
(ট)
শৌনক ব্রাহ্মণ হন যদিও ক্ষত্রিয় পরিবারে জন্ম হয়। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.৮.১)
এমনকি বায়ু পুরাণ, বিষ্ণু পুরাণ ও হরিবংশ পুরাণ অনুযায়ী শৌনক ঋষির পুত্রেরা সকল বর্ণের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
একই ধরনের দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় গ্রীতসমদ, বিতব্য ও বৃৎসমতির মধ্যে।
(ঠ)
মাতঙ্গ ছিলেন চন্ডালের পুত্র কিন্তু পরে ব্রাহ্মণ হন।
(ড)
রাবণ জন্মেছিলেন ঋষি পুলৎস্যের ঘরে কিন্তু পরে রাক্ষস হন।
(ঢ)
প্রবৃদ্ধ ছিলেন রাজা রঘুর পুত্র কিন্তু পরে রাক্ষস হন।
(ণ)
ত্রিশঙ্কু ছিলেন একজন রাজা যিনি পরে চন্ডাল হন।
(ত)
বিশ্বামিত্রের পুত্রেরা শূদ্র হন। বিশ্বামিত্র নিজে ছিলেন ক্ষত্রিয় যিনি পরে ব্রাহ্মণ হন।
(থ)
বিদুর ছিলেন এক চাকরের পুত্র কিন্তু পরে ব্রাহ্মণ হন এবং হস্তিনাপুর রাজ্যের মন্ত্রী হন।
৯।
"শূদ্র" শব্দটি বেদে দেখা গেছে প্রায় ২০ বারের মতো। কোথাও এটি অবমাননাকরভাবে ব্যবহৃত হয়নি। কোথাও বলা হয়নি শূদ্রেরা হলো অস্পর্শযোগ্য, জন্মগতভাবে এই অবস্থাণে, বেদ শিক্ষা হতে অনুনোমোদিত, অন্যান্য বর্ণের তুলনায় নিম্ন অবস্থাণের, যজ্ঞে অনুনোমোদিত।
১০।
বেদে বলা হয়েছে শূদ্র বলতে বোঝায় কঠিন পরিশ্রমী ব্যক্তি। (তপসে শূদ্রম্ - যজুর্বেদ ৩০.৫)
একারণেই পুরুষ সুক্ত এদের বলে পুরো মানব সমাজের কাঠামো।
১১।
যেহেতু বেদ অনুযায়ী চার বর্ণসমূহ বলতে বোঝায় চার প্রকারের কর্মকান্ড যা পছন্দের উপর ভিত্তি করে, একই ব্যক্তি প্রকাশ করতে পারে চার বর্ণের বৈশিষ্ট্য চার ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে। এইভাবে সকলেই চার বর্ণের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু সারল্যতার জন্য, আমরা বলি প্রধান পেশাকে বর্ণের পরিচয় হিসেবে। এবং এই কারণে সকল মানুষের উচিত পূর্ণভাবে চার বর্ণ হবার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করা, যেমনভাবে বেদের জ্ঞান আমাদের বলে। এই হলো পুরুষ সুক্তের সারাংশ।
ঋষি বশিষ্ঠ, বিশ্বামিত্র, অঙ্গীরা, গৌতম, বামদেব ও কন্ব - এরা সকলেই চার বর্ণের বৈশিষ্ট্যের দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। তারা বৈদিক মন্ত্রের অর্থ উদ্ভাবন করেছেন, দস্যু দমন করেছেন, দৈহিক শ্রমের কর্ম করেছেন এবং নিজেদেরকে যুক্ত করেছেন সমাজ কল্যাণের জন্য সম্পদ ব্যবস্থাপনায়।
আমাদেরও উচিত এমনটিই হওয়া।
অবশেষে আমরা দেখলাম বৈদিক সমাজ সকল মানুষকে একই জাতি বা গোষ্ঠী হিসেবে গণ্য করে, শ্রমের মর্যাদা বহাল রাখে, এবং সকল মানুষের জন্য সমান সুযোগ প্রদান করে যাতে তারা নিজ নিজ বর্ণ গ্রহণ করতে পারে।
বেদে কোনো প্রকার জন্মগত বৈষম্যের উল্লেখ নেই।
আমরা যেন সকলে একযুক্ত হয়ে একটি পরিবারের ন্যায় একতাবদ্ধ হতে পারি, প্রত্যাখান করতে পারি জন্মগত সকল বৈষম্যকে এবং একে অপরকে ভাই-বোন হিসেবে সদ্ব্যবহার করতে পারি।
আমরা যেন সকল পথভ্রষ্টকারীদের ভুল পথে এগুনো ব্যাহত করতে পারি যারা বেদে বর্ণভেদ সম্পর্কে ভিত্তিহীন দাবী করে এবং দমন করি সকল দস্যু, অসুর, রাক্ষসদের।
আমরা যেন সকলে আসতে পারি বেদের আশ্রয়ে এবং একত্রে কাজ করে মানবতার বন্ধনকে আরো দৃঢ় করতে পারি এক পরিবার হিসেবে।
সুতরাং বেদ অনুযায়ী কোনো বর্ণভেদ নেই।
সোর্স : বাঙালি হিন্দু পোস্ট
এই লেখায় আমরা চেষ্টা করব বেদ অনুযায়ী আমাদের caste system সম্পর্কে প্রকৃত ইতিহাস উদঘাটন করার এবং শূদ্রের আসল অর্থ খোঁজার।
১।
প্রথমত, কোনো প্রকার হিংসা বা বৈষম্যের স্থাণ নেই বেদে যেকোনো ব্যক্তি সম্পর্কে - সে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, বা শূদ্র কিনা।
২।
Caste system প্রায় নতুন। বেদে কোনো শব্দ নেই যার অর্থ বর্ণ/জাতি হতে পারে। আসলে, caste, জাতি আর বর্ণ এগুলো এক একটি এক এক অর্থ বহন করে।
Caste হলো একটি ইউরোপীয় নবধারা যার সাথে বৈদিক সংস্কৃতির কোনো সামঞ্জস্যতা নেই।
জাতি
'জাতি'র অর্থ হচ্ছে এক শ্রেণীভুক্তকরণ যার উৎস হচ্ছে জন্মে। ন্যায় সূত্র বলেছে "সমানপ্রসাভাত্মিকা জাতিহ্" অথবা তারা যাদের একইপ্রকার জন্মসূত্র যা এদেরকে একটি জাতিতে সমষ্টিবদ্ধ করে।
একটি প্রাথমিক আরো বড় শ্রেণীভুক্তকরণ ঋষিদের দ্বারা করা হয়েছে চারভাবে: উদ্ভিজ (অর্থাৎ গাছপালা), আন্ডাজ (অর্থাৎ ডিম থেকে যার উৎপত্তি যেমন পাখি এবং সরীসৃপ), পিন্ডজ (স্তন্যপায়ী), উষ্মজ (তাপমাত্রা বা পরিবেষ্টনকারী আবহাওয়ার জন্য যার জন্ম যেমন ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া ইত্যাদি)।
তেমনিভাবে নানাপ্রকার পশুসমূহ যেমন হাতি, সিংহ, খরগোশ ইত্যাদি তৈরি করে এক ভিন্ন 'জাতি'। একইভাবে সমস্ত মানবকুল তৈরি করে একটি 'জাতি'।
একটি নির্দিষ্ট জাতির থাকবে একই ধরনের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য যারা সেই জাতি থেকে আরেক জাতিতে পরিবর্তিত হতে পারবে না এবং ভিন্ন জাতির বাচ্চা প্রসব করতে পারবে না। অর্থাৎ, জাতি হচ্ছে ঈশ্বরের সৃষ্টি।
ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্রেরা কোনোভাবেই ভিন্ন জাতি নয় কারণ তাদের মধ্যে জন্ম সূত্রগত বা বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যগত কোনো পার্থক্য নেই যা তাদেরকে ভিন্ন করবে।
পরবর্তীতে 'জাতি' শব্দটি ব্যবহৃত হতে শুরু করে যেকোনো প্রকার শ্রেণীভেদকরণের জন্য। তাই সাধারণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা ভিন্ন ভিন্ন সমাজকেও ভিন্ন ভিন্ন 'জাতি' হিসেবে আখ্যা দেই। কিন্তু এ শুধু ব্যবহারের সুবিধার জন্য। আসলে আমরা মানবকুল এক জাতিরই অংশ।
বর্ণ
প্রকৃত যে শব্দ ব্যবহার করা হয়েছিল ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র বোঝাতে তা হলো 'বর্ণ' ('জাতি' নয়)।
'বর্ণ' শব্দটি যবহৃত হয়েছে এই চারকে বোঝাতেই নয়, বরং দস্যু ও আর্যদেরকেও।
'বর্ণ' অর্থ হচ্ছে তাহাই যাহা গ্রহণ করা হয় পছন্দের দ্বারা। তাই, যেখানে 'জাতি' ঈশ্বর দ্বারা প্রদত্ত, 'বর্ণ' হচ্ছে আমাদের নিজস্ব পছন্দগত।
যারা আর্য হতে পছন্দ করে তাদের বলা হয় 'আর্য বর্ণ'। তেমনি যারা দস্যু হতে পছন্দ করে, তারা হয় 'দস্যু বর্ণ'। একইভাবে হয় ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র।
এই কারণেই বৈদিক ধর্মকে বলা হয় 'বর্ণাশ্রম ধর্ম'। বর্ণ শব্দটি ইঙ্গিত করে যে এটির ভিত্তি হচ্ছে নিজ পছন্দকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া ও যোগ্যতা অনুসারে পরিচালিত ব্যবস্থাকে অনুমোদন দেয়া।
৩।
যারা বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত, তারা পছন্দ করেন 'ব্রাহ্মণ বর্ণ'। যারা প্রতিরক্ষা, যুদ্ধ-বিগ্রহ পছন্দ করেন, তারা হন 'ক্ষত্রিয় বর্ণ'। যারা অর্থনীতি ও পশুপালনাদি পছন্দ করেন তারা হন 'বৈশ্য বর্ণ' এবং যারা নিয়োজিত আছেন অন্যান্য সেবামূলক কাজ-কর্মে, তারা হন 'শূদ্র বর্ণ'। এসব শুধু বোঝায় নানা ধরনের পছন্দ যেসব মানুষজন তাদের কর্মের জন্য নির্বাচন করেন এবং এর সাথে 'জাতি' বা জন্মের কোনো সম্পর্ক নেই।
৪।
পুরুষ সুক্তের অন্যান্য মন্ত্রসমূহ উদ্ধৃতি দিয়ে প্রমাণ করেছে যে, ব্রাহ্মণ এসেছে ঈশ্বরের মুখ থেকে, ক্ষত্রিয় হাত থেকে, বৈশ্য উরু থেকে এবং শূদ্র পা থেকে। সেইভাবে এইসব বর্ণসমূহ জন্মগত। কিন্তু কোনোকিছুই এর চেয়ে বেশী ভ্রান্তিজনক হতে পারে না। আসুন দেখি কেন:
(অ)
বেদ ঈশ্বরকে বর্ণনা করে আকারহীন ও অপরিবর্তনশীল হিসেবে। এমন ঈশ্বর কিভাবে বিশাল আকৃতির মানুষের রূপ ধারণ করতে পারে যদি তিনি আকারহীনই হন? (যজুর্বেদ ৪০.৮)
(আ)
যদি ইহা সত্যিই হয়, তাহলে তাহা বেদের কর্মতত্ত্বের বিরোধীতা করবে। কারণ কর্মতত্ত্ব অনুযায়ী, একজন ব্যক্তির জন্মগত পরিবার পরিবর্তিত হতে পারে তার কর্ম অনুসারে। সুতরাং একজন ব্যক্তি যে শূদ্র পরিবারে জন্ম নেয়, পরের জন্মে এক রাজার পরিবারে জন্ম নিতে পারে। কিন্তু যদি শূদ্রেরা ঈশ্বরের পা থেকে এসে থাকে, তাহলে সেই একই শূদ্র ঈশ্বরের হাত থেকে কিভাবে জন্ম নেয়?
(ই)
আত্মা হলো সময়হীন এবং কখনো জন্ম নেয় না। সুতরাং আত্মার কখনোই কোনো বর্ণ হতে পারে না। এ শুধুমাত্র যখন আত্মা জন্ম নেয় মনুষ্য হিসেবে তখনই এর সুযোগ থাকে বর্ণ বেছে নেবার। তাহলে বর্ণ দ্বারা কি বোঝানো হয় যা ঈশ্বরের একাংশ হতে আসে? যদি আত্মা ঈশ্বরের দেহ থেকে জন্ম না নিয়ে থাকে, তাহলে কি এই বোঝায় যে আত্মার দেহ তৈরি হয়েছে ঈশ্বরের দেহের অংশ থেকে? কিন্তু বেদ অনুযায়ী, এমনকি প্রকৃতিও চিরন্তন। এবং এই একই অনু-পরমানু পুনর্ব্যবহৃত হচ্ছে নানা মনুষ্যের মধ্যে। তাই কৌশলগতভাবে ঈশ্বরের দেহ থেকে জন্ম নেয়া কারো পক্ষে অসম্ভব, এমনকি আমরা যদি ধরেও নেই ঈশ্বরের দেহ আছে।
(ঈ)
উপরে উল্লেখ করা পুরুষ সুক্ত রয়েছে যজুর্বেদের ৩১তম অধ্যায়ে (এবং ঋগবেদ ও অথর্ববেদ বাদে যেগুলোতে কিছু ভিন্নতা রয়েছে। যজুর্বেদে এ হচ্ছে ৩১.১১)। প্রকৃতভাবে এর অর্থ কি তা বোঝার জন্য, আসুন দেখি এর আগের মন্ত্রের দিকে লক্ষ্য করি ৩১.১০।
এতে প্রশ্ন করা হয়েছে - কে মুখ? কে হাত? কে উরু আর কেই বা পা?
এর পরের মন্ত্র এর উত্তর দিয়েছে - ব্রাহ্মণ হলো মুখ, ক্ষত্রিয় হলো হাত, বৈশ্য হলো উরু এবং শূদ্র হলো পা।
লক্ষ্য করুন, মন্ত্রটি কিন্তু বলছে না ব্রাহ্মণ "জন্ম নেয়" মুখ থেকে...এটি বলছে ব্রাহ্মণ "হলো" মুখ।
কারণ যদি মন্ত্রটির অর্থ হতো "জন্ম নেওয়া" তাহলে এটি উত্তর দিত না আগের মন্ত্রের প্রশ্নটির "কে মুখ?"
যেমন, যদি আমি প্রশ্ন করি "দশরথ কে?" উত্তরটি যদি হয় "রাম জন্ম নেন দশরথের ঘরে" তাহলে তা হবে অর্থহীন।
প্রকৃত অর্থ হচ্ছে:
সমাজে ব্রাহ্মণ বা বুদ্ধিজীবিরা তৈরি করে মস্তিষ্ক বা মাথা বা মুখ যা চিন্তা করে এবং বলে। ক্ষত্রিয় বা রক্ষণকর্মীরা তৈরি করে হাত যা রক্ষা করে। বৈশ্য বা উৎপাদনকারীরা এবং ব্যবসায়ীরা তৈরি করে উরু যা ভার বহন করে এবং যত্ন করে (লক্ষ্য করুন উরুর হাড় অথবা উর্বাস্থি তৈরি করে রক্ত এবং এ হচ্ছে দেহের সবচেয়ে শক্ত হাড়)। অথর্ববেদে উরুর বদলে "মধ্য" শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে যার অর্থ বোঝায় পাকস্থলী এবং দেহের মধ্যের অংশ।
শূদ্র বা শ্রমিকেরা তৈরি করে পা যা কাঠামোটিকে দাঁড় করায় এবং দেহকে চলতে সক্ষম করে।
পরবর্তী মন্ত্রগুলো আলোচনা করেছে অন্যান্য দেহের অংশ সম্পর্কে যেমন - মন, চোখ ইত্যাদি। পুরুষ সুক্ত বর্ণনা করেছে সৃষ্টির সূত্রপাত এবং তার স্থায়ী থাকা সম্পর্কে যার মধ্যে অন্তর্গত মানব সমাজ এবং বর্ণনা করেছে অর্থপূর্ণ সমাজের উপাদানসমূহকে।
তাই এ ভীষণ করুণ অবস্থা যে এমন সুন্দর সমাজ সম্পর্কে রূপক বর্ণনা এবং সৃষ্টি সম্পর্কিত বর্ণনা বিকৃত হয়েছে যা সম্পূর্ণভাবে বৈদিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে।
এমনকি ব্রহ্ম গ্রন্থগুলো, মনুস্মৃতি, মহাভারত, রামায়ণ এবং ভগবদগীতা বলে নাই কোনোকিছুই যার কাছাকাছি উপপ্রমেয় হতে পারে এমন অদ্ভূত যে ঈশ্বর তৈরি করেছেন ব্রাহ্মণদের তাঁর মুখ হতে মাংস ছিঁড়ে কিংবা ক্ষত্রিয়দের তাঁর হাতের মাংস থেকে বা অন্যান্যসমূহ।
৫।
তাই এটি স্বাভাবিক কেন ব্রাহ্মণরা বেদ অনুসারে সবচেয়ে বেশী সম্মান লাভ করেছে। এমনটিই হচ্ছে আজকের বর্তমান সমাজে। বুদ্ধিজীবিরা এবং অভিজ্ঞরা আমাদের সম্মান অর্জন করেন কারণ তারা তৈরি করেন দিক প্রদর্শনকারী সারা মানবতার জন্য। কিন্তু যেমনভাবে পূর্বে আলোচিত হয়েছে যে, বেদে শ্রমের মর্যাদা সমভাবে জোর দেওয়া হয়েছে এবং এই কারণেই কোনো প্রকার বৈষম্যের উপাদান নেই।
৬।
বৈদিক সংস্কৃতিতে সবাইকে ধরা হয় শূদ্র হিসেবে জন্ম। তারপর ব্যক্তির শিক্ষা-দীক্ষা দ্বারা সে পরিণত হয় ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্যতে। এই শিক্ষা-দীক্ষার পূর্ণতাকে ধরা হয় দ্বিতীয় জন্ম। একারণেই এই তিন বর্ণকে বলা হয় "দ্বিজ" বা দু'জন্মা। কিন্তু যারা রয়ে যায় অশিক্ষিত (যেকোনো কারণেই হোক) তারা সমাজ থেকে বিচ্যুত হয়। তারা চালিয়ে যায় শূদ্র হিসেবে এবং করে যায় সমাজের সেবামূলক কাজসমূহ।
৭।
এক ব্রাহ্মণের পুত্র, যদি সে তার শিক্ষা-দীক্ষা সম্পূর্ণ করতে অসমর্থ হয়, পরিণত হয় শূদ্রে। তেমনিভাবে শূদ্রের পুত্র অথবা এমনকি দস্যু, যদি সে তার শিক্ষা-দীক্ষা সম্পূর্ণ করে, তাহলে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় কিংবা বৈশ্য হতে পারে। এ হচ্ছে নির্ভেজাল যোগ্যতা অনুযায়ী ব্যবস্থা। যেমনভাবে এখনকার সময়ে ডিগ্রী প্রদান করা হয়, যজ্ঞপবিত দেয়া হতো বৈদিক নিয়ম অনুসারে। তাছাড়া, আচরণবিধির সাথে অসম্মতি ঘটলে যজ্ঞপবিত নিয়ে নেয়া হতো বর্ণগুলোর।
৮।
বৈদিক ইতিহাসে অনেক উদাহরণ রয়েছে বর্ণ পরিবর্তনের -
(ক)
ঋষি ঐতরেয়া ছিলেন দাস বা অপরাধীর পুত্র কিন্তু তিনি পরিণত হন শীর্ষ ব্রাহ্মণদের মধ্যে একজন এবং লেখেন ঐতরেয়া ব্রহ্ম এবং ঐতরেয়াপোনিষদ। ঐতরেয়া ব্রহ্মকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরা হয় ঋগবেদ বোঝার জন্য।
(খ)
ঋষি ঐলুশ জন্মেছিলেন দাসীর ঘরে যিনি ছিলেন জুয়াখোর এবং নিচু চরিত্রের লোক। কিন্তু এই ঋষি ঋগবেদের উপর গবেষণা করেন এবং কিছু বিষয় আবিষ্কার করেন। তিনি শুধুমাত্র ঋষিদের দ্বারা আমন্ত্রিতই হতেন না এমনকি আচার্য্য হিসেবেও অধিষ্ঠিত হন। (ঐতরেয়া ব্রহ্ম ২.১৯)
(গ)
সত্যকাম জাবাল ছিলেন এক পতিতার পুত্র যিনি পরে একজন ব্রাহ্মণ হন।
(ঘ)
প্রীষধ ছিলেন রাজা দক্ষের পুত্র যিনি পরে শূদ্র হন। পরবর্তীতে তিনি তপস্যা দ্বারা মোক্ষলাভ করেন প্রায়ঃশ্চিত্তের পরে। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.১.১৪)
যদি তপস্যা শূদ্রদের জন্য নিষিদ্ধ হতো যেমনভাবে উত্তর রামায়ণের নকল গল্প বলে, তাহলে প্রীষধ কিভাবে তা করল?
(ঙ)
নবগ, রাজা নেদিস্থের পুত্র পরিণত হন বৈশ্যে। তার অনেক পুত্র হয়ে যান ক্ষত্রিয়। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.১.১৩)
(চ)
ধৃষ্ট ছিলেন নবগের (বৈশ্য) পুত্র কিন্তু পরে ব্রাহ্মণ হন এবং তার পুত্র হন ক্ষত্রিয়। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.২.২)
(ছ)
তার পরবর্তী প্রজন্মে কেউ কেউ আবার ব্রাহ্মণ হন। (বিষ্ণু পুরাণ ৯.২.২৩)
(জ)
ভগবদ অনুসারে অগ্নিবেশ্য ব্রাহ্মণ হন যদিও তিনি জন্ম নেন এক রাজার ঘরে।
(ঝ)
রাথোটর জন্ম নেন ক্ষত্রিয় পরিবারে এবং পরে ব্রাহ্মণ হন বিষ্ণু পুরাণ ও ভগবদ অনুযায়ী।
(ঞ)
হরিৎ ব্রাহ্মণ হন ক্ষত্রিয়ের ঘরে জন্ম নেয়া সত্ত্বেও। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.৩.৫)
(ট)
শৌনক ব্রাহ্মণ হন যদিও ক্ষত্রিয় পরিবারে জন্ম হয়। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.৮.১)
এমনকি বায়ু পুরাণ, বিষ্ণু পুরাণ ও হরিবংশ পুরাণ অনুযায়ী শৌনক ঋষির পুত্রেরা সকল বর্ণের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
একই ধরনের দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় গ্রীতসমদ, বিতব্য ও বৃৎসমতির মধ্যে।
(ঠ)
মাতঙ্গ ছিলেন চন্ডালের পুত্র কিন্তু পরে ব্রাহ্মণ হন।
(ড)
রাবণ জন্মেছিলেন ঋষি পুলৎস্যের ঘরে কিন্তু পরে রাক্ষস হন।
(ঢ)
প্রবৃদ্ধ ছিলেন রাজা রঘুর পুত্র কিন্তু পরে রাক্ষস হন।
(ণ)
ত্রিশঙ্কু ছিলেন একজন রাজা যিনি পরে চন্ডাল হন।
(ত)
বিশ্বামিত্রের পুত্রেরা শূদ্র হন। বিশ্বামিত্র নিজে ছিলেন ক্ষত্রিয় যিনি পরে ব্রাহ্মণ হন।
(থ)
বিদুর ছিলেন এক চাকরের পুত্র কিন্তু পরে ব্রাহ্মণ হন এবং হস্তিনাপুর রাজ্যের মন্ত্রী হন।
৯।
"শূদ্র" শব্দটি বেদে দেখা গেছে প্রায় ২০ বারের মতো। কোথাও এটি অবমাননাকরভাবে ব্যবহৃত হয়নি। কোথাও বলা হয়নি শূদ্রেরা হলো অস্পর্শযোগ্য, জন্মগতভাবে এই অবস্থাণে, বেদ শিক্ষা হতে অনুনোমোদিত, অন্যান্য বর্ণের তুলনায় নিম্ন অবস্থাণের, যজ্ঞে অনুনোমোদিত।
১০।
বেদে বলা হয়েছে শূদ্র বলতে বোঝায় কঠিন পরিশ্রমী ব্যক্তি। (তপসে শূদ্রম্ - যজুর্বেদ ৩০.৫)
একারণেই পুরুষ সুক্ত এদের বলে পুরো মানব সমাজের কাঠামো।
১১।
যেহেতু বেদ অনুযায়ী চার বর্ণসমূহ বলতে বোঝায় চার প্রকারের কর্মকান্ড যা পছন্দের উপর ভিত্তি করে, একই ব্যক্তি প্রকাশ করতে পারে চার বর্ণের বৈশিষ্ট্য চার ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে। এইভাবে সকলেই চার বর্ণের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু সারল্যতার জন্য, আমরা বলি প্রধান পেশাকে বর্ণের পরিচয় হিসেবে। এবং এই কারণে সকল মানুষের উচিত পূর্ণভাবে চার বর্ণ হবার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করা, যেমনভাবে বেদের জ্ঞান আমাদের বলে। এই হলো পুরুষ সুক্তের সারাংশ।
ঋষি বশিষ্ঠ, বিশ্বামিত্র, অঙ্গীরা, গৌতম, বামদেব ও কন্ব - এরা সকলেই চার বর্ণের বৈশিষ্ট্যের দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। তারা বৈদিক মন্ত্রের অর্থ উদ্ভাবন করেছেন, দস্যু দমন করেছেন, দৈহিক শ্রমের কর্ম করেছেন এবং নিজেদেরকে যুক্ত করেছেন সমাজ কল্যাণের জন্য সম্পদ ব্যবস্থাপনায়।
আমাদেরও উচিত এমনটিই হওয়া।
অবশেষে আমরা দেখলাম বৈদিক সমাজ সকল মানুষকে একই জাতি বা গোষ্ঠী হিসেবে গণ্য করে, শ্রমের মর্যাদা বহাল রাখে, এবং সকল মানুষের জন্য সমান সুযোগ প্রদান করে যাতে তারা নিজ নিজ বর্ণ গ্রহণ করতে পারে।
বেদে কোনো প্রকার জন্মগত বৈষম্যের উল্লেখ নেই।
আমরা যেন সকলে একযুক্ত হয়ে একটি পরিবারের ন্যায় একতাবদ্ধ হতে পারি, প্রত্যাখান করতে পারি জন্মগত সকল বৈষম্যকে এবং একে অপরকে ভাই-বোন হিসেবে সদ্ব্যবহার করতে পারি।
আমরা যেন সকল পথভ্রষ্টকারীদের ভুল পথে এগুনো ব্যাহত করতে পারি যারা বেদে বর্ণভেদ সম্পর্কে ভিত্তিহীন দাবী করে এবং দমন করি সকল দস্যু, অসুর, রাক্ষসদের।
আমরা যেন সকলে আসতে পারি বেদের আশ্রয়ে এবং একত্রে কাজ করে মানবতার বন্ধনকে আরো দৃঢ় করতে পারি এক পরিবার হিসেবে।
সুতরাং বেদ অনুযায়ী কোনো বর্ণভেদ নেই।
সোর্স : বাঙালি হিন্দু পোস্ট
বেদে গোহত্যা এবং গোমাংস খাওয়া সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ
বেদে গোহত্যা এবং গোমাংস খাওয়া সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ।
বেদ হিন্দুদের আদি ধর্ম গ্রন্থ । বেদে গোহত্যা এবং গোমাংস খাওয়া সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ। এটা হিন্দু সমাজ মেনে চলে কঠোর ভাবে।
কিন্তু কিছুদিন ধরে ইন্টারনেট ফোরাম গুলো তে হিন্দুদের বিরুদ্ধে
প্রপোগান্ডা চলছে। এরা চায় ১০০ কোটি হিন্দু নিজের বিশ্বাস ত্যাগ করে তাদের
ধর্মে ধর্মান্তরিত হোক যেটা তাদের মতে সর্বশেষ পথ । বেশির ভাগ হিন্দুই
নিজের ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞানী নয় তাই তারা এই শিকারীদের সহজ শিকারে পরিনত
হচ্ছে । দেখা যাক বেদ গোহত্যা নিয়ে কি বলে?
১. Ghrtam duhaanaamaditim janaayaagne maa himsiheeh
Yajurveda 13.49
Do not kill cows and bulls who always deserve to be protected.
২. Aare gohaa nrhaa vadho vo astu
Rigveda 7.56.১৭
ঋগবেদে গোহত্যা কে মানুষ হত্যার সমকক্ষ বলা হয়েছে ও এর সাথে জড়িতদের শাস্তি দিতে বলা হয়েছে ।
৩. Sooyavasaad bhagavatee hi bhooyaa atho vayam bhagvantah syaama
Addhi trnamaghnye vishwadaaneem piba shuddhamudakamaacharantee
Rigveda 1.164.40 or Atharv 7.73.11 or Atharv 9.10.২০
The Aghnya cows – which are not to be killed under any circumstances–
may keep themselves healthy by use of pure water and green grass, so
that we may be endowed with virtues, knowledge and wealth.
বেদে আঘ্ন্যা . অহি , ও অদিতি হচ্ছে গরুর সমপদ।
আঘ্ন্যা মানে যাকে হত্যা করা উচিত নয় ।
অহি মানে যার গলা কাটা / জবাই করা উচিত নয় ।
অদিতি মানে যাকে টুকরো টুকরো করা উচিত নয় ।
(Source: Yaska the commentator on Nighantu )
৪. Aghnyeyam saa vardhataam mahate soubhagaaya
Rigveda 1.164.27
আঘ্ন্যা গরু আমাদের সুসাস্থ্য ও উন্নতি আনে ।
৫. Suprapaanam Bhavatvaghnyaayaah
Rigveda 5.83.৮
আঘ্ন্যা গরুর জন্য সুপেয় জলের উন্নত ব্যবস্থা থাকা উচিত ।
৬.
Yah paurusheyena kravishaa samankte yo ashwena pashunaa yaatudhaanah
Yo aghnyaayaa bharati ksheeramagne teshaam sheershaani harasaapi vrishcha
Rigveda 10.87.16
Those who feed on human, horse or animal flesh and those who destroy milk-giving Aghnya cows should be severely punished.
এখানে মানুষ,ঘোড়া ও গোমাংস আহারকারিদের শাস্তির কথা বলা আছে ।
৭. Vimucchyadhvamaghnyaa devayaanaa aganma
Yajurveda 12.73
The Aghnya cows and bulls bring you prosperity.
৮. Maa gaamanaagaamaditim vadhishta
Rigveda 8.101.15
Do not kill the cow. Cow is innocent and aditi – that ought not to be cut into pieces .
৯. Antakaaya goghaatam
Yajurveda 30.18
Destroy those who kill cows .
১০.
Yadi no gaam hansi yadyashwam yadi poorusham
Tam tvaa seesena vidhyaamo yatha no so aveeraha
Atharvaveda 1.16.4
If someone destroys our cows, horses or people, kill him with a bullet of lead.
১১. Vatsam jaatamivaaghnyaa
Atharvaveda 3.30.1
Love each other as the Aghnya – non-killable cow – loves its calf.
কিছু কি আর বলা লাগবে বেদ গো হত্যার পক্ষে নাকি বিপক্ষে ?
১২. Dhenu sadanam rayeenaam
Atharvaveda 11.1.34
Cow is fountainhead of all bounties .
ঋগ্বেদের ৬ মন্ডলের ২৮ সুক্ত গরুর প্রশংসা করেছে।
Aa gaavo agnamannuta bhadramakrantseedantu
Bhooyobhooyo rayimidasya vardhayannabhinne
Na taa nashanti na dabhaati taskaro naasaamamitro vyathiraa dadharshati
Na taa arvaa renukakaato ashnute na samskritramupa yanti taa abhi
Gaavo bhago gaava indro me achhaan
Yooyam gaavo medayathaa
Maa vah stena eeshata maaghanshasah
1. Everyone should ensure that cows are free from miseries and kept healthy.
2. God blesses those who take care of cows.
3. Even the enemies should not use any weapon on cows
4. No one should slaughter the cow
5. Cow brings prosperity and strength
6. If cows keep healthy and happy, men and women shall also keep disease free and prosperous
7. May the cow eat green grass and pure water. May they not be killed and bring prosperity to us.
তারপরও কিছু স্বঘোষিত Scholar হিন্দু বিরোধী Site থেকে copypaste করে যাচ্ছে। এদের উদ্দেশ্যে বলব “অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী “।
বেদে গোহত্যা এবং গোমাংস খাওয়া সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ এটা কমুনিস্ট এবং
মিশনারীরা মানতে পারে না। আমাদের বৈদিক সমাজ ব্যবস্থা তাদের সমাজ এর চেয়ে
আদর্শিক ভাবে উন্নত। এদের সাথে যোগ হয়েছে একদল ধর্ম ব্যবসায়ী। তারা বেদ ও
মনুসংহিতা থেকে গরুর মাংস খাওয়ার Reference খুঁজে বের করতে চায় একটি
এদের সহজ Trick হচ্ছে ‘মানসা‘ কে meat / মাংস হিসেবে অনুবাদ করা । ‘মানসা‘
মানে ডাল জাতীয় খাবার ।
আজ বেদ হতে কিছু অপপ্রচার এর জবাব দিব।
১. অপপ্রচার:
Rigveda (10/85/13) declares, “On the occasion of a girl’s marriage oxen and cows are slaughtered.”
জবাব: প্রকৃতঅর্থে মন্ত্র টি বলে সূর্যের আলো শীতকালে ম্লান হয়ে যায়
এবং বসন্ত কালে শক্তি ফিরে পায় । (the rays of sun get weakened and then
get strong again in spring.)
The word used for sun-rays in ‘Go’ which also means cow and hence the
mantra can also be translated by making ‘cow’ and not ‘sun-rays’ as the
subject. The word used for ‘weakened’ is ‘Hanyate’ which can also mean
killing. But if that be so, why would the mantra go further and state in
next line (which is deliberately not translated) that in spring, they
start regaining their original form.How can a cow killed in winter
regain its health in spring? This amply proves how ignorant and biased
communists malign Vedas.
সমপদ জিনিস তা এরা বুজে না।
২. অপপ্রচার: Rigveda (6/17/1) states that “Indra used to eat the meat of cow, calf, horse and buffalo.”
জবাব: মন্ত্র টি বলছে মেধাবী পন্ডিতরা বিশ্ব কে আলোকিত করেন যেমন কাঠ যোগ্গের এর আগুন এর আলো বাড়ায় ।
৩. অপপ্রচার: ব্লগ এ ম জ বাসার নামে এক পন্ডিত বলছে(লিঙ্ক),”বৃষের মাংশ
[বেদ:১/১৬৪/৪৩], মহিষের মাংস [বেদ: ৫/২৯/৮], অজের মাংস [বেদ:১/১৬২/৩]
খাওয়া হতো।- আরও বলা হয়েছে পরস্বিনী গাভী মানুষের ভজনীয় [ বেদ:৪/১/৬]।-
গো হত্যা স্থানে গাভীগণ হত্যা হতো [বেদ:১০/৮৯/১৪]। ইন্দ্রের জন্য গোবৎস
উৎসর্গ করা হয়েছে। [ঋকবেদ:১০:৮৬:১৪]। এমনকি উপনিষদ বলছে: ‘বেদজ্ঞান লাভ
করতে হলে, স্বাস্থ্যবাদ সন্তান লাভ করতে হলে ষাঁড়ের মাংস খাওয়া জরুরী।”
জবাব: সমপদের অর্থ আর প্রয়োগ না জানলে এ রকম ই হবে ।
যেমন:
�keshavaM patitaM dr^shtvA pandavAH harshsha nirbharAH
rudanti kauravAssarve hA keshava hA keshava.�
সোজা কথায় মন্ত্রের অর্থ হবে কেশব/কৃষ্ণ কে পরে যেতে দেখে পান্ডবরা উল্লসিত হলো আর কৌরবরা ও কৃষ্ণ, ও কৃষ্ণ বলে অর্থনাদ করে উঠলো।
এখন এটার কোনো মানে হয় না । কারণ কৃষ্ণ ছিলেন পান্ডবদের পক্ষে।
একই শব্দের নানা অর্থ থাকে।
দেখুন:
১. কেশব= জল
২. পান্ডব= সারস পাখি
৩. কৌরব= কাক
৪. শব= মৃত দেহ
এবার অর্থ দেখুন:
�keshavaM patitaM dr^shtvA pandavAH harshsha nirbharAH
rudanti kauravAssarve hA keshava hA keshava.�
মৃত দেহটিকে জলে পড়ে যেতে দেখে সারস পাখি খুশি হলো এবং কাক আর্তনাদ করে উঠলো- মৃত দেহটি
জলে পড়ে গেছে, মৃত দেহটি জলে পড়ে গেছে।
এখন আমাদের পন্ডিতরাকি বলবেন ‘ কৃষ্ণকে পান্ডবরা ঘৃনা করতেন?’
একই ভাবে বাসার ভাই চালাকি করেছেন ।
আমি দেখাচ্ছি:
“বৃষের মাংশ [বেদ:১/১৬৪/৪৩], মহিষের মাংস [বেদ: ৫/২৯/৮], অজের মাংস
[বেদ:১/১৬২/৩] খাওয়া হতো।- আরও বলা হয়েছে পরস্বিনী গাভী মানুষের ভজনীয় [
বেদ:৪/১/৬]।- গো হত্যা স্থানে গাভীগণ হত্যা হতো [বেদ:১০/৮৯/১৪]। ইন্দ্রের
জন্য গোবৎস উৎসর্গ করা হয়েছে। [ঋকবেদ:১০:৮৬:১৪]। এমনকি উপনিষদ বলছে:
‘বেদজ্ঞান লাভ করতে হলে, স্বাস্থ্যবাদ সন্তান লাভ করতে হলে ষাঁড়ের মাংস
খাওয়া জরুরী।”
অপপ্রচার: ইন্দ্রের জন্য গোবৎস উৎসর্গ করা হয়েছে। [ঋকবেদ:১০:৮৬:১৪]
জবাব:
�ghastta indra ukshshaNaH priyam…..� _RigVeda 10.86.13
�ukshshaNo hi me panchadasha sAkaM pachanti vimshatiM…� _RigVeda 10.86.14
অর্থ :
rik 10.86.13, IndrANi tells Indra, �please receive your favorite soma quickly..�
In rik 10.86.14 Indra replies, �they are preparing soma for offering fifteen and twenty times..�
এখানে ukshshNa মানে সোম, বৃষ নয়।
অপপ্রচার:
মহিষের মাংস [বেদ: ৫/২৯/৮] খাওয়ার কথা রয়েছে ।
জবাব:
�trI yachChatA mahishshANAmag
ho mastrI….� _ RigVeda 5.29.8
সঠিক অর্থ:
oh Indra, when
you have recieved three hundred offerings of soma, you will be powerful to kill vr^tra.
অপপ্রচার: অজের মাংস [বেদ:১/১৬২/৩] খাওয়া হতো।
জবাব:
�eshshachChAgaH puro ashvena vAjinA…� _RigVeda 1.162.3
সঠিক অর্থ:
�the morning fire is lit before, thew sun, the giver of food rises�
এখানে ছাগ মানে shr^ngarahita ajA / সিন্হীন ছাগল নয় বরং উষালোক।
অপপ্রচার: বৃষের মাংশ [বেদ:১/১৬৪/৪৩] খাওয়া হতো।
জবাব:
�…ukshANaM pRshnimapachanta vIrAH…….�…_ RigVeda 1.164.43
সঠিক অর্থ: I saw from far away the smoke of fuel with spires that rose on high o’er that beneath it.
The Mighty Men have dressed the spotted bullock. These were the customs in the days aforetime,
অপপ্রচার: পরস্বিনী গাভী মানুষের ভজনীয় [ বেদ:৪/১/৬]।
জবাব:
Excellent is the glance, of brightest splendour, which the auspicious God bestows on mortals-
The God’s glance, longed-for even as the butter, pure, heated, of the cow, the milch-cow’s bounty.
কোথাও বলা নেই গরু কে জবাই কর ।
অপপ্রচার: – গো হত্যা স্থানে গাভীগণ হত্যা হতো [বেদ:১০/৮৯/১৪]।
জবাব:
এখানে Grifith সাহেবের Translation করলে হবে না । Grifith হিন্দুদের
খ্রিস্টিয়ান ধর্মে ধর্মান্তরিত করতে সেই Translation করেসিলেন এটা
প্রমানিত । এখানে এই ধরনের কোনো কথা বলা হয় নি । এটি একটি প্রার্থনা
সঙ্গীত ।
Indra- O glorious warrior!
Te- Your
Aghasya- destroyer of evil
Chetya- power
Kahrrisvit- when
Asat- will appear
Yat- with which you
Rakshah- monsters
Bhinadah- kill
Mitrkruvo- those who are cruel to our dear ones
Eshat- cast terror in them
Yat- so that
Shasne- in the battlefield
Na- just like
Aaryak- after death
Gaavah- animals
Prathivyah- on the field
Shayante- lay or sleep
O glorious soldier! Where is your valor with which you kill the
devils and cast terror in the hearts of wrong-doer cruel criminals and
due to which they will be lying dead just like animals lay on ground
while sleeping.(Rig Veda 10.89.14)
আমি সকল কে বলব বেদ থেকে একটি মন্ত্র দেখান যেটাতে গোহত্যা এবং গোমাংস
খাওয়া বৈধতা দেয়া হয়েছে তাহলে আমি আপনার কথা মত বিশ্বের যেকোনো ধর্ম
গ্রহণ করব আর আপনি যদি না পারেন তবে আপনাকে হিন্দু ধর্মে ফিরে আসতে হবে ।
গফরগাঁওয়ে হিন্দু কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের পর ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করল যুবলীগ নেতা
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে যুবলীগ নামধারী এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে কলেজছাত্রীকে
অপহরণ করে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি সংখ্যালঘু ওই ছাত্রীকে
ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করারও অভিযোগ উঠেছে।
পরিবারের লোকজনের সহযোগিতায় গত শনিবার দুপুরে ওই কলেজছাত্রী বাদী হয়ে গফরগাঁও থানায় গফরগাঁও উপজেলার টাঙ্গাব ইউনিয়নের বামনখালী গ্রামের শামছুল হকের ছেলে আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় গতকাল রোববার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা হয়েছে।
থানায় দায়ের করা ছাত্রীর অভিযোগ ও তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, আলতাফ হোসেন অনেক আগে থেকে ওই ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় আলতাফ তাকে একাধিকবার অপহরণের হুমকি দেয়। একপর্যায়ে সে ওই ছাত্রীর পরিবারের কাছে কাপাসিয়া উপজেলার কাপাসিয়া বাজারের জনৈক ব্যক্তির সঙ্গে ওই ছাত্রীর বিয়ের প্রস্তাব দেয়। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এক ব্যক্তির সহযোগিতায় আলতাফ ওই ছাত্রীকে কৌশলে অপহরণ করে প্রথমে কিশোরগঞ্জ ও পরে শ্রীপুর উপজেলার মাওনায় নিয়ে যায়। এ সময় ছাত্রীকে ওই ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ের কথা বলে ছবি তোলে এবং লেখাবিহীন চারটি হলুদ কাগজে স্বাক্ষর নেয়।
থানায় দায়ের করা অভিযোগে ছাত্রীটি আরও দাবি করে, মাওনা এলাকায় মাটির একটি টিনশেড ঘরে তাকে নিয়ে সঙ্গের লোকটিকে বিদায় করে দেয় আলতাফ। এ সময় আলতাফ তাকে জানায়, নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে হিন্দু থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে সে নাকি তাকে বিয়ে করেছে। অভিযোগে ছাত্রীটি আরও দাবি করে, ঘরে আটকে রেখে আলতাফ তাকে ধর্ষণ করেছে।
ছাত্রীর পিতা অভিযোগ করেন, ছাত্রীটি পালিয়ে আসার পর থেকে আলতাফ এ ব্যাপারে আইনের আশ্রয় নিলে দেশান্তর করাসহ তাঁর মেয়েকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।
টাঙ্গাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন জানান, আলতাফ বাজে লোক হিসেবে পরিচিত। এ পর্যন্ত সে পাঁচ-ছয়টি বিয়ে করেছে। আলতাফ যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। তবে এলাকায় নিজেকে যুবলীগের নেতা পরিচয় দেয়।
গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওমর ফারুক জানান, ছাত্রীর দেওয়া অভিযোগের তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
সোর্স: প্রথম আলো
পরিবারের লোকজনের সহযোগিতায় গত শনিবার দুপুরে ওই কলেজছাত্রী বাদী হয়ে গফরগাঁও থানায় গফরগাঁও উপজেলার টাঙ্গাব ইউনিয়নের বামনখালী গ্রামের শামছুল হকের ছেলে আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় গতকাল রোববার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা হয়েছে।
থানায় দায়ের করা ছাত্রীর অভিযোগ ও তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, আলতাফ হোসেন অনেক আগে থেকে ওই ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় আলতাফ তাকে একাধিকবার অপহরণের হুমকি দেয়। একপর্যায়ে সে ওই ছাত্রীর পরিবারের কাছে কাপাসিয়া উপজেলার কাপাসিয়া বাজারের জনৈক ব্যক্তির সঙ্গে ওই ছাত্রীর বিয়ের প্রস্তাব দেয়। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এক ব্যক্তির সহযোগিতায় আলতাফ ওই ছাত্রীকে কৌশলে অপহরণ করে প্রথমে কিশোরগঞ্জ ও পরে শ্রীপুর উপজেলার মাওনায় নিয়ে যায়। এ সময় ছাত্রীকে ওই ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ের কথা বলে ছবি তোলে এবং লেখাবিহীন চারটি হলুদ কাগজে স্বাক্ষর নেয়।
থানায় দায়ের করা অভিযোগে ছাত্রীটি আরও দাবি করে, মাওনা এলাকায় মাটির একটি টিনশেড ঘরে তাকে নিয়ে সঙ্গের লোকটিকে বিদায় করে দেয় আলতাফ। এ সময় আলতাফ তাকে জানায়, নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে হিন্দু থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে সে নাকি তাকে বিয়ে করেছে। অভিযোগে ছাত্রীটি আরও দাবি করে, ঘরে আটকে রেখে আলতাফ তাকে ধর্ষণ করেছে।
ছাত্রীর পিতা অভিযোগ করেন, ছাত্রীটি পালিয়ে আসার পর থেকে আলতাফ এ ব্যাপারে আইনের আশ্রয় নিলে দেশান্তর করাসহ তাঁর মেয়েকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।
টাঙ্গাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন জানান, আলতাফ বাজে লোক হিসেবে পরিচিত। এ পর্যন্ত সে পাঁচ-ছয়টি বিয়ে করেছে। আলতাফ যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। তবে এলাকায় নিজেকে যুবলীগের নেতা পরিচয় দেয়।
গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওমর ফারুক জানান, ছাত্রীর দেওয়া অভিযোগের তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
সোর্স: প্রথম আলো
হিন্দু ধর্মের উপর ড. এপিজে আবদুল কালাম
২০১১ সালের ১ জুলাই। দিল্লীর স্বামীনারায়ণ অক্ষরধামে ‘Hinduism, An Introduction’ নামে বইয়ের মোড়ক উন্মোচিত হয়। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ড. এপিজে আবদুল কালাম।
Swaminarayan Aksharpith থেকে প্রকাশিত এই বইটিতে হিন্দু ধর্মের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
ভাষণ দিতে গিয়ে ড. আবদুল কালাম বলেন, “ হিন্দু ধর্ম যথার্থ অর্থেই একটি স্বাভাবিক ধর্ম। এর সহনশীলতা এবং নৈতিকতার জন্য আজ এক সভ্য সমাজ হিন্দু ধর্ম গড়তে পেরেছে। বইটি যখন আমি পড়লাম তখন আমি দেখলাম হিন্দু ধর্ম একটি নদীর মত যা এক বড় নদীর মত আপনধারায় প্রবাহমান।”
উল্লেখ্য ড. আবদুল কালাম একজন নিরামিষভোজী তামিল এবং তিনি গীতাপাঠ করেন।
Friday, March 8, 2013
লাভ জিহাদ এবং হিন্দু বোনদের জন্য সতর্কবার্তা
অতি স¤প্রতি সিলেটের একটি ঘটনা দেশের ছোট বড় প্রায় সব
কটি পত্র পত্রিকায় নিউজ হিসেবে ছাপিয়েছে। নিউজটি হল একজন
সিলেটের ডাক্তার তার স্ত্রীকে তালাবদ্ধ অবস্থায় বন্দি করে হজ্জ ব্রত পালন করতে
সৌদি আরব গেছেন
। বলা বাহুল্য, তালাবদ্ধ
অবস্থায় বন্দিনী স্ত্রীলোকটি এককালে হিন্দু ছিলেন এবং তিনিও পেশায় ডাক্তার। লাভ জিহাদীদের খপ্পরে পড়ে নিজ পিতৃ
ধর্ম পরিত্যাগ ও ভালবাসার টানে অতি আশা করে মুসলিম ডাক্তারের ঘরণী হয়েছে, আর এর
চরম মূল্য কি করে দিচ্ছেন, তা আমরা সকলে পত্র পত্রিকা মারফত
অবগত হলাম। এটা
কোন বিচিন্ন ঘটনা নয়, এটি বহু পুরাতন ও ধারাবাহিক ঘটনার
একটি মাত্র। প্রায়
প্রত্যেকটি ধর্মান্তরিত বিয়ের পর ধর্মান্তরিত মেয়েদের ক্ষেত্রে এমনই হয়। কারণ মূল কারণ হলো যে ধর্মে
ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়েটা করলেন, ঐ ধর্ম দর্শনে একজন পূরুষের ৪ এর
অনধিক বিয়ে করার অধিকার এবং ভাল না লাগলে দেন মোহরের টাকা দিয়ে বিদেয় করার
বিধান সংরক্ষিত করা আছে। হিন্দু
মেয়েদের ধর্মান্তরিত হয়ে বিবাহ ও পরবর্তী পরিনতি বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে বহু
দৃষ্টান্ত আমাদের প্রত্যেক্ষ হয়েছে নিচে এ রকম একটটি ঘটনার বিবরন হুবহু তুলে
ধরলাম। এটি
একজন লেখকের বরারব প্রেরিত চিঠি যা হবহু তুলে ধরা হল, সকল
অববিবাহিত হিন্দু ভাই ও বোনদের পড়ার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি-***********
মাননীয় রবীন্দ্রনাথ বাবু,
আপনার লেখা ‘নিঃশব্দ সন্ত্রাস’ বইটা আমার এক বন্ধুর মারফৎ পেয়ে বিশেষ মনোযোগ সহকারে পাঠ করে আমি এতই অভিভূত হয়েছি যে, বইতে দেওয়া ফোন নাম্বার যোগাযোগ করার ঠিকানা নিয়ে আপনাকে এই পত্র দিচ্ছি। আপনার বইতে আমার জীবনের একটা ঘটনার বা¯Íব চিত্র আপনি অঙ্কিত করেছেন এবং আমাদের একটা পরিবার কিভাবে ধ্বংস হয়েছে তা আপনাকে জানিয়ে মনটাকে কিছু হাল্কা করার চেষ্টা করছি। আমার জন্ম নদীয়া জেলার একটি অতি প্রাচীন ব্রাহ্মণ বংশে। আমাদের পরিবার এতই নিষ্ঠাবান যে মাছমাংস তো দূরের কথা পেঁয়াজ-রসুন, মসুর ডাল ইত্যাদিও খাওয়া বারণ। আমার ঠাকুরদাদা বেঁচে থাকতে পাঁজি-পুঁথি দেখে খাদ্য নির্বাচিত হতো; যথা- প্রতিপদে কুমড়ো, মাঘ মাসে মূলো, কুল ইত্যাদি ভÿণ নিষেধ। তাছাড়া একাদশী, অমাবস্যায় নিশিপালন, বারোমাসে তেরো পার্বন। পূজা ব্রতকথা উপবাস ইত্যাদি তো লেগেই থাকত। ব্রাহ্মণ কন্যা ছাড়া আমাদের বাড়ীতে পরিচারিকা রাখা হতো না। নদীয়া, বর্ধমানের গ্রাম অঞ্চল থেকে গরীব ব্রাহ্মণ কন্যাদেরকে বেশী মাইনে এবং খাওয়া-পরা দিয়ে নিযুক্ত করা হতো। আমার পূর্বপুরুষদের অনেক শিষ্য অবিভক্ত বাংলার বিভনড়ব জেলা, আসাম, মণিপুর ইত্যাদি অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। প্রতি বৎসর প্রচুর টাকা এম.ও. যোগে বিভিনড়ব সময় আসতো। আমার ঠাকুরদাদা যখন শিষ্য বাড়ীতে যেতেন তখন ব্রাহ্মণ পাচক সঙ্গে নিয়ে যেতেন। তিনি অন্য জাতির হাতের জল পর্যন্ত খেতেন না। এহেন গোঁড়া ব্রাহ্মণ পরিবারে আমার জন্ম। আমরা ভইবোন দুজনে যমজ; প্রথমে জন্মেছি বলে আমি বড়, তার কিছুÿণ পরে জন্মেছে বলে বোন ছোট। দুজনে মায়ের দুই ¯Íন পান করে একই বিছানায় শুয়ে বড় হয়েছি। ভাইবোনের যখন কোন অসুখ হত তখন দুজনেই ঐ অসুখে আক্রান্ত হতাম। যথা জ্বর হলে একই টেম্পারেচার, পেট খারাপ হলে একই রকম পায়খানা ইত্যাদি। আমার বাবা-মা একজনকে ডাক্তারের চেম্বারে নিয়ে গিয়ে প্রেসক্রিপশান করিয়ে এনে দুজনকে একই ঔষধ খাওয়ালে রোগ নিরাময় হতো। ছোটবেলায় চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত দুজনে পাড়ার একই স্কুলে পড়েছি এবং সববিষয়ে দুজনে প্রায় একই নম্বর পেতাম। তারপর উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত দুজনে আলাদা স্কুলে পড়েছি।
আমি ছেলেদের এবং বোন মেয়েদের স্কুলে পড়েছি। এরপর কলেজে দুজনে আবার একই কলেজ ভর্তি হই। সেই থেকেই আমাদের পরিবারে এক ভয়ানক বিপর্যয় আরম্ভ হয়। আমাদের কিছু সহপাঠী ছিল গ্রাম অঞ্চল থেকে আসা চাষী পরিবারের মুসলমান। সেই সুবাদে আমার বোন একটা গ্রাম্য মুসলমান সহপাঠীর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা আরম্ভ করে। প্রায় এক বৎসর এভাবে চলার পর আমার বোন ঐ মুসলমান ছেলেকেই বিয়ে করবে বলে মনস্থির করে ফেলে। শত বোঝানোর ফলেও তাকে ফেরানো যায়নি। ধীরে ধীরে এই সংবাদ বাবা এবং পরিবারের অন্যান্যদের গোচরীভূত হয়। ইতমধ্যে বোন সকলের প্রচন্ড বাধা অতিক্রম করে গৃহত্যাগী হয়ে ঐ মুসলমান সহপাঠীর বাড়ীতে চলে যায়। সামাজিক এবং লোকলজ্জার ভয়ে আমরা থানা পুলিশ বা তাকে উদ্ধারের কোন চেষ্টাই করিনি। মুসলমান পরিবার তাকে সাদরে গ্রহণ করে ইসলাম ধর্মে দীÿিত করে তার বিবাহ সম্পনড়ব করে। এরপর লজ্জায় এবং ঘৃণায় একমাস আর কলেজ যাইনি। এরপর কলেজে যোগ দিয়ে ঐ গ্রামের অন্য মুসলমান সহপাঠীদের নিকট আমার বোনের দুঃসহ জীবনের সংবাদ পেতে থাকি, যথা খাওয়া-দাওয়ার প্রচন্ড অসুবিধা। যে দিন গোমাংস রান্না হতো, সেদিন বমি করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়া, মুসলমান জীবনের মত নিয়ম, অষ্টপাশ বন্ধন, স্বামীর সাথে কোথাও বের হলে বোরখা পরা অবস্থায় চলাফেরা, পাঁচবার নামাজ পড়া ইত্যাদি তার অসহ্য হয়ে উঠে। কিন্তু এখন আর ফেরার কোন পথ নেই। আমাদের পরিবারে তার কোন স্থান হবে না তা সে বুঝতে পারে। সে আমাকে তার অনুতপ্ত জীবনের ঘটনা জানিয়ে গোপনে এক আত্মীয়ের বাড়ীর ঠিকানায় চিঠি দিয়ে সব জানায় এবং ÿমা প্রার্থনা করে। কিন্তু দুঃখ পাওয়া ছাড়া আমার আর কিছুই করার নেই। এরমধ্যে আরম্ভ হয়ে গেছে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রচন্ড অশান্তি। সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকতে হয় কখন না তালাক তালাক তালাক’ বলে ঘাড় ধরে ঘর থেকে বের না করে দেয়। আমি তাকে উপদেশ দিয়ে পত্র দিতাম মানিয়ে চলতে। কারণ এখন বাড়ীতে ফেরার কোন উপায় নেই। বিয়ের পরেই তার স্বামী কলেজের পড়া ছেড়ে দিয়ে গ্রামে চাষাবাদে মন দেয় এবং মাঝে মাঝে বাইরে কোথাও গিয়ে কিছু কাজকর্ম করে বাড়ী ফিরে আসে। তার ৫ বৎসর বিবাহিত জীবনে সে ৪টি সন্তানের মা হয়। কিন্তু স্বামী- স্ত্রীর মনোমালিন্য এবং অশান্তি চলতেই থাকে। এরপর খবর পেলাম তার স্বামী বাইরে কোথাও চাকুরী নিয়ে চলে গেছে এবং আমার বোন এবং বাচ্চাদেরকে তার কর্মস্থলে নিয়ে গেছে। এরপর অনেক দিন আর কোন সংবাদ পাইনি। ভাবলাম এবার হয়তো বোন একটু সুখে-শান্তিতে আছে। কিছুদিন পর আমার এক আত্মীয়ের বাড়ীর ঠিকানায় খামে এক পত্র আসে আমার নামে। খাম খুলে চিঠিটি পড়ে জানতে পারলাম বোন এখন মধ্য ভারতের কোন এক শহরের এক গণিকালয়ে অবস্থান করছে এবং তার স্বামীই মোটা টাকার বিনিময়ে ষড়যন্ত্র করে দালাল মারফৎ তাকে সেখানে বিক্রি করে দিয়েছে। তার জীবনের জন্য তার কোন দুঃখ নেই। তার কৃতকর্মের ফল সে ভোগ করছে, কিন্তু তার চারটে সন্তানের জন্য সে ভয়ানক চিন্তিত। সে লিখেছে আমি সেন একটু খোঁজ করে দেখি তার সন্তানরা কোথায় কি অবস্থায় আছে।
আমার হৃদয়ের ব্যথা কাউকে জানাবার লোক নেই তাই আপনাকে দীর্ঘ এই পত্র লিখে মনের বেদনা কিছুটা হাল্কা করলাম। আপনি হিন্দু মেয়েদের মুসলমান বিয়ে করে দুরবস্থার কথা চিন্তা করে পরিশ্রম করে বইটা লিখেছেন। তার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ জানাই।
ইতি, শ্রদ্ধাবনত.........
***********
(বিঃদ্রঃ- কোটেড অংশটি ‘নিঃশব্দ সন্ত্রাস’ নামক বই থেকে নেয়া ****** অরুন চন্দ্র মজুমদার, ঢাকা ১2/১১/২০১২ইং)
Subscribe to:
Posts (Atom)